গোসল করিবার নিয়ম

Siyam Hasan
By -
0


গোসল করিবার নিয়ম


গোসল করিবার স্থান পর্দাযুক্ত ও নির্জন হওয়া একান্ত আবশ্যক। যাহাতে গোসল করিবার সময়ে অন্য কেহ দেখিতে না পায়। পায়খানা ও প্রস্রাবের আবশ্যক থাকিলে গোসলের পূর্বে সারিয়ে তাহারপর গোসল করিবে। প্রথমে বিসমিল্লাহ পড়িবে, তাহারপর নিচের নিয়ত করিয়া উভয় হাত কব্জা পর্যন্ত দুইবে।


গোসলের নিয়ত


تويت العمل يوقع الجنابة 


উচ্চারণ: নাওয়াইতুল গোসলা লি রাফইল জানাব্যাতি।


অনুবাদঃ নাপাকী দূর করিবার জন্য গোসল করিতেছি।


অযুর বর্ণনা


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হাত, পা, মুখ প্রভৃতি অঙ্গ ধৌত করার নাম অযু। শরীরকে পবিত্র করিবার জন্য অযু করিবার বিধান করা হইয়াছে। নামায পড়িবার পূর্বে ও কোরআন শরীফ পড়িবার পূর্বে অযু করা প্রত্যেকের জন্য ফরব।


অযুর মধ্যে ৪টি ফরয


১. কপালের উপরিভাগের চুল উঠিবার স্থান হইতে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হইতে অপর কানের লতি পর্যন্ত সমগ্র মুখমণ্ডল ধৌত করা ২. উভয় হজের কনুই পর্যন্ত যৌত করা ৩. দুই পা গিরা পর্যন্ত ধৌত করা ৪. মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ করা।


অযুর মধ্যে ১৪টি কাজ সুন্নত


১. অযু শুরু করিবার সময়ে বিসমিল্লাহ বলিয়া শুরু করা এবং অযুর দোয়া পাঠ করা। ২. দুই হাত কব্জা পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা ৩. মেছওয়াক করা, মেছওয়াকের অভাবে


ডান হাতের শাহাদত আঙ্গুলি দ্বারা দাঁত ঘর্ষণ করা ৪. গড়গড়াসহ তিনবার কুলি করা, রোজার দিনে গড়গড়া কুলি করিবে না। ৫. উভয় হাতের আঙ্গুল সমূহ খেলাল করা ৬. তিনবার নাকের ভিতর পানি দেওয়া। ৭. দাঁড়ি খেলাল করা ৮. উভয় পায়ের আঙ্গুল সমূহ খেলাল করা। ৯. প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার করে ধৌত করা ১০. সমূদয় মাথা একবার মাসেহ করা। ১১. দুই কান মাসেহ করা ১২. অযুর নিয়ত করা। ১৩. তরতিব মতো অর্থাৎ যথাক্রমে নিয়ম রক্ষা করো অযু করা। ১৪. এক অঙ্গ ভিজা থাকতেই অন্য অঙ্গ ধৌত করা।


অযুতে ৬টি মাকরূহ


১. অযু করিবার সময়ে মুখমণ্ডলে পানি জোরে নিক্ষেপ করিলে এবং ঐ পানির ছিটা শরীরে লাগিলে। ২. নাপাক স্থানে বসিয়া অযু করিলে। ৩. বিনা ওজরে বাম হাত দ্বারা কুলি করিলে ও ডান হাত দ্বারা নাক ঝাড়িলে। ৪. অযুর সময়ে সাংসারিক কথা বলিলে। ৫. ছতর খুলিয়া অযু করিলে। ৬. তিন বারের বেশি ধৌত করিলে।


নিম্নলিখিত কারণে অযু ভঙ্গ হয়


১. মলদ্বার দিয়া মল, কৃমি, রক্ত, পুঁজ, পোক বা বায়ু নির্গত হলে। ২. প্রস্রাবের দ্বার দিয়া প্রসাব, রক্ত, পুঁজ, বীর্য, মজ্জি ইত্যাদি বাহির হইলে। ৩. ক্ষতস্থান হইতে রক্ত বা পুঁজ বাহির হইয়া গড়াইয়া পড়িলে। ৪. শরীরে সুঁচ, কাঁটা বিদ্ধ হইলে বা কোথাও কাটিয়া গেলে যদি রক্ত বাহির হইয়া গড়াইয়া যায়। ৫. দাঁতের গোড়া হইতে রক্ত বাহির হইলে তাহা থুতু পরিমাণ হইলে। ৬। মুখ ভরিয়া বমি করিলে। ৭. চিৎ অথবা কাৎ হইয়া কোন বস্তুতে হেলান দিয়া নিদ্রা গেলে। ৮. উন্মাদ অথবা অচেতন হইলে। ৯. নামাযের মধ্যে খলখল করিয়া হাসিলে। ১০. স্ত্রী-পুরুষের লিঙ্গ স্পর্শ করাইলে।


অযুর নিয়ত


উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আতায়াজ্জাআ লিরাফইল হাসাছি ওয়ান্তিবাহতীল লিছ ছালাতি ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তা'আলা।


অনুবাদ: নাপাকী দূর করিবার জন্য ও শুদ্ধভাবে নামায পড়িবার জন্য এবং আল্লাহপাকের নৈকট্য লাভের জন্য অযু করিবার নিয়ত করিলাম।


অযু করিবার নিয়ম


প্রথমে ছতর ঢাকিয়া উঁচু জায়গায় পশ্চিম দিকে মুখ করিয়া বসিয়া অযুর নিয়ত করিবে। তাহারপর নিচের দোয়া পড়িয়া অযু আরম্ভ করিবে।


অযুর দোয়া


উচ্চারণ: বিছমিল্লাহিল আলিয়ি‍্যল আজীম, ওয়াল হামদু লিল্লাহি আলা দ্দীনিল ইসলামি আল ইসলামু নুরুন ওয়াল কুফরুন জুলমাতুন ইসলামুল হাক্কু ওয়াল কুফরুন বাতিলুন।


অনুবাদঃ সর্বশ্রেষ্ঠ আল্লাহ তা'আলার নামে শুরু করিতেরি এবং ইসলাম ধর্মের জন্য প্রশংসাই আল্লাহর উপযুক্ত কেননা ইসলাম সত্য ও কৃষর মিথ্যা এবং ইসলাম জ্যোতির্ময়


তায়াম্মুমের নিয়ত


উচ্চারণ : নাওয়াইতুয়ান আতাইয়্যাখামু নিরাফয়িল হাদাছি ওয়াছতি- বাহাতাল-লিচ্ছালাতি ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তায়ালা।


অনুবাদঃ আমি ছোট বড় নাপাকী দূর করিবার জন্য নামাযের বিশুদ্ধতাহার জন্য এবং আল্লাহ্ পাকের নৈকট্য লাভের জন্য তায়াম্মুমের নিয়ত করিতেছি।


যে যে বস্তু যারা তায়াম্মুম করা দুরস্ত


১. মাটি কিম্বা মাটি হইতে যে বস্তু সৃষ্টি হইয়াছে, তাহার দ্বারাই তায়াম্মুম করা দুরুস্ত হইবে; যথা-ধুলা, বালি, পাথর, চুন, সুরকী, কাঁচ, ইট, হরিতাল, সুরমা ইত্যাদি দ্বারাও,


তায়াম্মুম করা দুরস্ত কিন্তু গুলা জমিয়া না থাকিলে পাথর দ্বারা তায়াম্মুম দুরস্ত হইবে না। ২. মাটির হাড়ি-পাতিল ও মাটির বাসন ইত্যাদির উপর এবং দালানের গায়ের উপর হাত ঘষিয়া তায়াম্মুম করিলেও দুরস্ত হইবে, কিন্তু উক্ত হাড়ি-পাতিল নতুন ও পাক হওয়া


চাই। ছাই ভষ্ম, কয়লা প্রভৃতি দ্বারা তায়াম্মুম দুরস্ত নহে।


তায়াম্মুম করিবার নিয়ম


১. প্রথমে তায়াম্মুমের নিয়ত করিবে, তাহারপর পাক মাটির উপর দুই হাত নিক্ষেপ করিয়া একটু অগ্রপশ্চাৎ ঘর্ষণ করিয়া দুই হাত একটু ঝাড়িয়া ঐ ধুলাযুক্ত হস্তদ্বয় দ্বার। সমস্ত মুখমণ্ডল মাসেহ করিবে। স্ত্রীলোকগণ মুখমণ্ডল মাসেহ করিবার সময়ে নাকে গহনা


থাকিলে তাহা খুলিয়া লইবে অথবা উহার নিম্নদেশ পর্যন্ত ভালরূপে মুছিয়া লইবে।


২. দ্বিতীয়বারে হস্ত পাক মাটির উপর নিক্ষেপ করিয়া বাম হস্তের অর্ধেক তালু ও মধ্যমা, অনামিকা, কনিষ্ঠা এই তিনটি আঙ্গুল দ্বারা ডান হস্তের পশ্চাদভাগ; অবশিষ্ট তালু, বৃদ্ধা ও তর্জনী অঙ্গুলী দ্বারা হাতের সম্মুখ ভাগ (কনুই হইতে আরম্ভ করিয়া আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত) একবার মুছিয়া ফেলিবে। ঐরূপে ডান হস্ত দ্বারা বাম হস্ত মুজিবে।


• স্ত্রীলোকগণ তাহা মাসেহ করিবার সময়ে চুড়ি, বালা, আংটি ইত্যাদি গহনা থাকিলে তাহা পূর্বেই খুলিয়া লইবে অথবা নিম্নদেশ ভালরূপে মুছিয়া দিবে।


৩. তৃতীয়বার উভয় হস্ত পাক মাটিতে নিক্ষেপ করিয়া উভয় হস্তের আঙ্গুল খেলাল


করিবে।


মুখমণ্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত মাসেহ করিতে যদি বিন্দু পরিমাণ স্থানও বাকি থাকে, তবে তায়াম্মুম দুরস্ত হইবে না। 


নামাযের ফরযসমূহ


১০১


নামায আদায় করিতে হইলে কতকগুলি। নিয়ম অবশাই পালন করিতে হইবে। নাম- াযের বাহিরে আটটি নিয়ম। ইহাকে নামাযের শর্ত বলে এবং নামাযের ভিতরে ছয়টি ফরয়। ইহাকে রোকন বলে।


নামাযের ওয়াজিব সমূহ


নামাযের মধ্যে যে সকল ওয়াজিব আছে, ইহা থেকে কোন একটিও ভুল বশতঃ ছাড়িয়া দিলে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিতে হইবে। নামাযের ওয়াজিব ১১টি।


১. প্রত্যেক রাকাতে প্রথম সূরাহ ফাতিহা পাঠ করা।


২. সূরাহ ফাতিহার পর অন্য একটি সুরাহ মিলাইয়া পড়া (বড় এক আয়াত বা ছোট


তিন আয়াত।) ৩. পরপর নামাযের রোকনগুলি সম্পন্ন করা। অর্থাৎ প্রত্যেক রুকু সিজদা করা এবং তাহারতিবের প্রতি লক্ষ্য রাখা।


৪. প্রথম বৈঠক।


৫. আত্তাহিয়্যাতু পড়া।


৬. নামাযান্তে সালাম ফিরান।


৮. দুই ঈদের নামাযে অতিরিক্ত ছয় তাকুবীর বলা।


৯. ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকআতে সুন্নত ও নফল নামাযে সকল রাকআতে সূরা


ফাতিহার সহিত অন্য একটি সূরা পড়া।


১০. নামাযের রোকনগুলি আস্তে আস্তে আদায় করা।


১১. যে নামায উচ্চঃস্বরে পড়িতে হয়, তাহা উচ্চঃস্বরে পড়া এবং যাহা আস্তে আস্তে


পড়িতে হয় তাহা আস্তে আস্তে পড়া।


নামাযের সুন্নত সমূহ


১. তাকবীর বলিয়া দুই হাত কর্ণের লতি পর্যন্ত উঠান। ২. হাতের আঙ্গুল পরস্পর


পৃথক রাখা। ৩. ইমামের জন্য নামায আরম্ভের তাকবীর উচ্চঃস্বরে পড়া ৪. ছানা পাঠ করা ৫. "আউযুবিল্লাহ" পাঠ করা। ৬. "বিছমিল্লাহ" পাঠ করা। ৭. সূরা ফাতিহা পাঠ করিবার পর ঈমাম ও মুক্তাদিগণের মৃদুস্বরে "আমীন" বলা। ৮. পুরুষের জন্য নাভীর নীচে তাহর- ীমা বাঁধা আর স্ত্রী লোকের জন্য সিনার উপরে তাহরীমা বাঁধা। ৯. রুকুর তাকবীর বলা। ১০. রুকুতে দুই জানু ধরা ও আঙ্গুলসমূহ পরস্পর পৃথক রাখা। ১১. রুকুর ভিতরে তিন, পাঁচ বা সাতবার তাছবীহ বলা। ১২. রুকু হইতে উঠিয়া সোজা হইয়া দাঁড়ান। ১৩, রুকু হইতে উঠিবার সময়ে ইমামের ছামিয়াল্লাহ হুলিমান হামিদা" ও মোক্তাদিগণের "রাব্বানা লাকাল হাম্দ" বলা। ১৪. সেজদায় যাইয়া দুই হাঁটু ও তাকবীর বলিয়া বসা। ১৫. সেজদায় তাছবীহ পড়া। ১৬. পুরুষের জন্য সেজদা হইতে উঠিয়া ডান পা খাড়া রাখিয়া' বাম পায়ের উপর বসা, আর স্ত্রীলোকের উভয় পা ডান দিকে বাহির করিয়া চতরের উপর বসা। ১৭. সেজদা থেকে উঠিয়া এক তছবীহ পরিমাণ সময় বসিয়া থাকা। ১৮. দরুদ শরীফ পাঠ করা। ১৯. দোয়ায়ে মাছুরা পড়া। ২০. দুই দিকে সালাম ফিরান।


নামাযের মোস্তাহাব সমূহ


১. একামতের সময়ে "হাইয়্যালাল ফালাহ" বলামাত্র নামাযে ঠিকভাবে দাঁড়ান। ২. "কাদ-কামাতিচ্ছালাহ" বলা মাত্র ইমামের নামায আরম্ভ করা। ৩. তাকবীরে তাহরীমা। 


বলার সময়ে আস্তিন হইতে হাতের তালু বাহির করা। ৪. দাঁড়াইসার সময়ে স্ক্রিন্দার জায়গার প্রতি দৃষ্টি রাখা। ৫. রুকুতে পায়ের পাতাহার দিকে দৃষ্টি রাখা। ৬. বৈঠকে কোলের দিকে দৃষ্টি রাখ।। ৭. সাধ্যানুযায়ী হাসি ও কাশি বন্ধ রাখা। ৮. রুকুতে মাথা ও পৃষ্ঠভাগ সমান উঁচু রাখা। ৯. সিজদায় প্রথমে দুই জানু ও দুই হাত জমিনে রাখা, পরে নাক ও তাহারপরে কপাল জমিনে রাখা এবং সেজদ। হইতে উঠিবার সময়ে যথাক্রমে প্রথমে কপাল, পরে নাক উঠাইয়া তৎপর দুই হাত জানুর উপরে রাখিয়া বসা। ১০. দুই হাতের মধ্যে মস্তক রাখা, নাক দুই বৃদ্ধাংগুলির মধ্যে বরাবর রাখা। ১১. হাত-পায়ের আঙ্গুলিসমূহ কেবলা রাখা। ১২. ছালাম ফিরাইতে দুই গন্ধের প্রতি দৃষ্টি রাখা। ১৩. সেজদায় পুরুষের পক্ষে দুই বাজু পৃথকভাবে রাখা ও এইরূপভাবে উঁচুতে রাখিতে হইবে। যেন বকরীর বাচ্চা যাতায়াত করিতে পারে। কিন্তু স্ত্রীলোকের পক্ষে সেজদায় ইহার বিপরীত করিতে হইবে। যেমন দুই বাজু চাপিয়া রাখা এবং রানের উপর পেট রাখা। ১৪. তিনবারের অধিক-বেজোড় তাছবীহ পড়া। ১৫. ফযরের নামাযে প্রথম রাকাআতে ত্রিশ আয়াত পাঠ করায় দ্বিতীয় রাকআতে কুড়ি আয়াত পাঠ করা। ১৬. জোহরের নামাযে ত্রিশ আয়াত পাঠ করা। ১৭. আসরের নামাযে ২০ (কুড়ি) আয়াত পাঠ করা। ১৮. মাগরিবের নামাযে ছোট ছোট সূরাহ পাঠ করা। ১৯. এশার নামাযে বিশ আয়াত পাঠ করা।


নামাযের মাকরূহাত


১. চাঁদর বা জামা না পড়িয়া কাঁধে ঝুলাইয়া রাখা। ২. ময়লা, ধুলা-বালি লাগিবার ভয়ে কাপড় জামা গুটানো। ৩. আঙ্গুল মটকান। ৪. বস্ত্র শরীর অথবা দাঁড়ির সহিত খেলা করা। ৫. এদিক ওদিক দেখা। ৬. চুল মাথার উপরিভাগে বাঁধা। ৭. । ৭. বিনা ওয়ারে সেজদার স্থানের ইট-পাথর সরান। ৮. আলস্যভরে শরীর মোড়ামুড়ি করা। ৯. সিজদার সময়ে হাত বিছাইয়া দেওয়া। ১০. আগের কাতারে স্থান থাকিতে পিছনের কাতারে দাঁড়ান। ১১. অব- হেলা করিয়া খালি মাথায় নামায পড়া। ১২. আকাশের দিকে তাকান। ১৩. ভাল কাপড় থাকা সত্ত্বেও মন্দ কাপড়ে নামায পড়া। ১৪: নামায়ের মধ্যে কপালের মাটি মুছিয়া ফেলা। ১৫. কোন প্রাণীর প্রতিমূর্তি সম্মুখে ডাইনে বামে মস্তকের উপর বা কাপড়ের মধ্যে থাকা। ১৬. সিজদার সময়ে বিনা কারণে হাঁটুর পূর্বে হাত মাটিতে রাখা। ১৭, বিনা কারণে আসন পাতিয়া বসা। ১৮। ফরয নামাযে এক সূরা বার বার পড়া। ১৯. কোন মানুষের মুখের দিক হইয়া নামায পড়া। ২০. সিজদাতে পিঠ উভয় উরুর সহিত মিলাইয়া দেওয়া। ২১. এক হাত বা তদুর্ধ স্থানে ইমামের দাঁড়ান। ২২. নাক-মুখ ঢাকিয়া নামায পড়া। ২৩, উভয় সিজদার মধ্যে অথবা তাশাহুদ পড়িবার সময়ে কুকুরের ন্যায় বসা। ২৪, দুই হাতে মাটি ভর দিয়া উঠা। ২৫. কোন সুন্নত পরিত্যাগ করা।


পুরুষ এবং স্ত্রীলোকের নামাযের পার্থক্য


পুরুষ এবং স্ত্রীলোকের নামায প্রায় একই রকম, মাত্র কয়েকটি বিষয়ে পার্থক্য আছে।


১. তাকবীরে তাহরীমার সময় পুরুষ চাদরের নীচ হইতে হাত বাহির করে কান পর্যন্ত উঠাবে। কিন্তু স্ত্রীলোক হাত বাহির করিবে না। কাপড়ের ভিতর রেখেই কাঁধ পর্যন্ত উঠাইবে।


২. তাকবীরে তাহরীমা বলিয়া পুরুষ নাভির নীচে হাত বাঁধিবে। আর স্ত্রীলোক বুকের উপর হাত বাঁধিবে।

৩. রুকু করার সময় পুরুষ এমনভাবে ঝুঁকবে যেন মাথা, পিঠ এবং চতর এক বরাবর হয়। স্ত্রীলোক এই পরিমাণ ঝুঁকবে যাহাতে হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌছে।


৪. রুকুর সময় পুরুষগণ হাতের আঙ্গুল ফাঁক করে হাঁটু ধরবে। আর স্ত্রীলোক আঙ্গুল ফাক করিবে না বরং মিলাইয়া রাখবে।


৫. রুকু অবস্থায় পুরুষ কনুই পাজর হইতে ফাঁক রাখবে। আর স্ত্রীলোক কনুই পর্যন্ত পাজরের সঙ্গে মিলাইয়া রাখবে।


৬. সিজদায় পুরুষ পেট উরু হইতে এবং বাজু বগল হইতে পৃথক রাখবে। পক্ষান্তরে স্ত্রীলোক পেট উরুর সঙ্গে এবং বাজু বগলের সঙ্গে মিলাইয়া রাখবে।


৭. সিজদায় পুরুষ কনুই মাটি হইতে উপরে রাখবে। স্ত্রীলোক মাটির সঙ্গে মিলাইয়া রাখবে।


৮. সিজদার মধ্যে পুরুষ পায়ের আঙ্গুলগুলি কেবলার দিকে মোড়াইয়া রেখে তাহার উপর ভর দিয়া ডান পায়ের পাতা দুইখানা খাড়া রাখবে। স্ত্রীলোক উভয় পায়ের পাতা ডান দিকে বাহির করে মাটিতে বিছাইয়া দিবে।


৯. স্ত্রীলোকের জন্য উচ্চ শব্দে কেরাআত পড়বার বা তাকবীর বলবার হুকুম নাই। মেয়েরা সব সময় সব নামাযের কেরাআত আস্তে আস্তে পড়বে।


১০. নামাযে বসার সময় পুরুষ ডান পায়ের আঙ্গুলগুলি কেবলার দিকে মোড়াইয়া রাখিয়া তাহার উপর ভর দিয়া ডান পায়ের পাতাটি খাড়া রাখবে এবং বাম পায়ের পাতা বিছাইয়া তাহার উপর বসবে। আর স্ত্রীলোক পায়ের পাতা ডান দিকে বাহির করে দিবে এবং ডান উরু বাম উরুর উপর এবং ডান নলা বাম নলার উপর বসিবে।



Tags:

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)